সনদ নমুনা
ইজাযাহ কী ও কেন গুরুত্বপূর্ণ
ইজাযাহ (إِجازَة) একটি আরবি শব্দ, যার অর্থ অনুমোদন বা স্বীকৃতি। এটি এমন একটি আনুষ্ঠানিক অনুমতিপত্র যা কোনো যোগ্য ও অনুমতিপ্রাপ্ত শিক্ষক তার শিক্ষার্থীকে প্রদান করেন, নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ের ওপর শিক্ষা প্রদানের অনুমতির স্বরূপ। ইজাযাহর সঙ্গে কখনো সনদও যুক্ত থাকে, যা একটি ধারাবাহিক শৃঙ্খল (سلسلة) নির্দেশ করে—এই শৃঙ্খলের মাধ্যমে শিক্ষক থেকে তার পূর্বসূরিদের হয়ে সাহাবায়ে কেরাম এবং অবশেষে রাসূলুল্লাহ ﷺ পর্যন্ত সম্পর্ক স্থাপিত হয়।
বিশেষ করে ক্বিরাআতের ক্ষেত্রে, ইজাযাহ এই সত্যের প্রমাণ বহন করে যে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী নির্দিষ্ট একটি বা একাধিক ক্বিরাআতের যাবতীয় নিয়ম-কানুন, আহকাম ও ক্বাইদাহ গভীরভাবে আয়ত্ত করেছে এবং তা যথাযথভাবে প্রয়োগের মাধ্যমে নির্ভুলভাবে কুরআন তিলাওয়াতে সক্ষম বিধায় বিশ্বস্ত ও অনুমোদিত শিক্ষকের কাছ থেকে ক্বিরাআত ও তাজউইদ শিক্ষাদানের অনুমতি অর্জন করেছে।

অনুগ্রহপূর্বক কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতীত রেজিস্ট্রেশন করবেন না।
ইজাযাহ প্রোগাম সম্পর্কে বিস্তারিত
ইনবাত কর্তৃক পরিচালিত ইজাযাহ প্রোগ্রাম কুরআনের যোগ্য, দক্ষ ও স্বীকৃত শিক্ষক গড়ে তোলার এক অসামান্য প্রয়াশ। ২০২১ সালে যাত্রা শুরু করে এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে ইতোমধ্যে সফলভাবে ২৮ জন সম্মানিত শিক্ষার্থীকে ইজাযাহ প্রদান করা হয়েছে। তাঁরা এখন ইনবাতসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে কুরআনের খেদমতে নিয়োজিত এবং দেশের তাজউইদ ও ক্বিরাআতের দুর্বল অবস্থা উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি—এই প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় উপমহাদেশ একদিন তাজউইদ ও ক্বিরাআতের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ মারকাযে পরিণত হবে, ইন শা আল্লাহ।
এই প্রোগ্রাম তিনটি মারহালায় (স্তরে) বিভক্ত। একজন শিক্ষার্থীকে ধাপে ধাপে উচ্চতর পর্যায়ে পৌঁছতে হয় :
এই স্তরে একজন শিক্ষার্থীকে সম্পূর্ণ কুরআন তাজউইদের যথাযথ ব্যাখ্যাসহ সঠিক নিয়ম মেনে তিলাওয়াত করতে হয়। একই সময়ে তাঁকে দুটি বিখ্যাত নাযম—তুহফাতুল আত্বফাল ও মুক্বাদ্দিমাতুল জাযারিয়্যাহ ব্যাখ্যাসহ শেখানো হয়। যদি তাঁর আহকামের জ্ঞান ও তিলাওয়াত যথেষ্ট মানসম্পন্ন হয়, তবে তিনি দ্বিতীয় মারহালায় অগ্রসর হবেন। অন্যথায়, শুধুমাত্র কুরআন তিলাওয়াত সম্পন্ন করার ভিত্তিতে একটি শাহাদাহ (সার্টিফিকেট) প্রদান করা হবে। দ্বিতীয় মারহালায় উত্তীর্ণদের মৌখিকভাবে ইজাযাহ ‘আম্মাহ প্রদান করা হয়।
এই স্তরে সম্মানিত মুজাযকে (ইজাযাহ গ্রহণকারীকে) পরবর্তী ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মুতাদাররিব/মুতাদাররিবাহ (ট্রেইনি শিক্ষক/শিক্ষিকা) হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এখানে তাকে প্রশিক্ষণমূলক দারসে অংশগ্রহণ করতে হয় এবং জালসুত-তাসমী’-এর মাধ্যমে নতুন শিক্ষার্থীদের কুরআন তিলাওয়াত শোনার দায়িত্ব পালন করতে হয়। এর বিনিময়ে নির্ধারিত সম্মানীও প্রদান করা হয়। এটি শিক্ষার্থীর বাস্তব প্রশিক্ষণ ও শিক্ষকতার যোগ্যতা বিকাশে সহায়ক।
চূড়ান্ত স্তরে শিক্ষার্থীকে একটি আনুষ্ঠানিক পরীক্ষা দিতে হয়, যা সরাসরি অংশগ্রহণের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার মাধ্যমেই তাকে লিখিতভাবে পূর্ণ সনদসহ ইজাযাহ খাসসাহ প্রদান করা হয়।

সর্বমোট শিক্ষার্থী

সর্বমোট ব্যাচ

ইজাযাহ পেয়েছেন
যোগ্যতার মানদণ্ড
ইজাযাহ প্রোগ্রাম সবার জন্য উন্মুক্ত নয়—এতে অংশগ্রহণ করতে হলে নির্দিষ্ট কিছু যোগ্যতা ও পূর্বশর্ত পূরণ করতে হয়। বিশেষভাবে, যারা ইতোমধ্যে তাজউইদ বিষয়ে কিছুটা জ্ঞান রাখেন বা এ বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন এবং কুরআন তিলাওয়াত করতে পারেন, তাদের জন্য প্রাথমিকভাবে নিচের শর্তগুলো পূরণ করা আবশ্যক:
১. তাজউইদ লং কোর্স সম্পন্ন করতে হবে।
২. কোর্সের প্রতিটি পরীক্ষায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে।
৩. চূড়ান্ত ফলাফলে ৪ টি পরীক্ষার গড় মিলিয়ে কমপক্ষে ৭০% নম্বর অর্জন করতে হবে।
৪. চূড়ান্ত মৌখিক পরীক্ষায় ৫০-এর মধ্যে অন্তত ৪০ নম্বর পেতে হবে।
অন্যদিকে, যারা সম্পূর্ণ নতুনভাবে তাজউইদের শিক্ষা শুরু করতে চান, তাদেরকে প্রথমে আরও কয়েকটি অতিরিক্ত ধাপ অনুসরণ করতে হবে। সেই প্রস্তুতিপর্ব শেষে উপযুক্ত হলে ইজাযাহ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে। আপনি কোন ধাপে রয়েছেন এবং কোথা থেকে শুরু করবেন জানতে এখানে যোগাযোগ করুন।

দ্বিতীয় ধাপ
কুরআনের শব্দ চর্চা কোর্সএই কোর্সটিতে কুরআনের শব্দসমূহের মাশকের মাধ্যমে তিলাওয়াতে পারদর্শী করে তোলা হয়।

তৃতীয় ধাপ
তাজউইদ লং কোর্সতাজউইদের ইতিহাস ও বিস্তারিত আহকাম নিয়ে কোর্সটি সাজানো। এই কোর্সের মাধ্যমে আহকামুত তাজউইদের জ্ঞান রপ্ত হবে।